বেঙ্গল ফাউন্ডেশন

বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়

বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মূল লক্ষ্য সংস্কৃতিচর্চার মধ্য দিয়ে উচ্চতর মনন তৈরি এবং সংস্কৃতি সাধনার বহুমুখী ধারার মধ্য দিয়ে জীবনের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যকে উপলব্ধি করা। বাঙালি সংস্কৃতির মূলস্তম্ভ বাংলা গান। বাংলা গানকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে, তার ভিত আরো মজবুত করা প্রয়োজন। আমরা মনে করি,  শাস্ত্রীয়সংগীত চর্চায় নবীনদের উদ্বুদ্ধ  করলে বাংলা গানের ভবিষ্যৎ পথচলা সুগম হবে। কণ্ঠশিল্পী ও যন্ত্রশিল্পী শাস্ত্রীয়সংগীতে যথার্থ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হলেই এই ভিত মজবুত এবং সকল সংগীতরীতিই উপকৃত হবে।

বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নিবেদিতপ্রাণ বহু সংগীতশিল্পীর নাম, যাঁরা জন্ম বা পারিবারিক সূত্রে এদেশেরই মানুষ। তাঁদের আলোকিত উত্তরাধিকার আমাদেরও। সেই ঐতিহ্য ও সংগীত আবহের সঙ্গে নবীন প্রজন্মকে পরিচিত করাতেই ২০১৪ সালের নভেম্বরে যাত্রা শুরু করে শাস্ত্রীয়সংগীত শিক্ষায়তন বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়। গুরু-শিষ্য পরম্পরা পদ্ধতিতে  উপমহাদেশের উচ্চাঙ্গসংগীতের বিশিষ্ট গুরুদের তত্ত্বাবধানে এই সংগীতালয়ে শিক্ষাদান করা হয়।

বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের যে স্বাভাবিক মেধা ও আগ্রহ রয়েছে তাকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে সযত্নে ছাত্রছাত্রী বাছাই করা হয়। সংগীতালয়ে পাঠদান করা হয় বিনামূল্যে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে রয়েছে কিছু ভাতার ব্যবস্থা।

আমরা আশা করি, সাধনার পথ ধরে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বমানের নবীন পারফর্মার তৈরি হবে। ইতিমধ্যেই সংগীতালয়ের শিক্ষার্থীরা বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, হাজারো কণ্ঠে বর্ষবরণসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করে শ্রোতৃমহলে প্রশংসিত হয়েছেন। বর্তমানে বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ে প্রায় ষাটজন শিক্ষার্থী খেয়াল, ধ্রুপদ, সরোদ, সেতার, তবলা ও এসরাজ বিভাগে শিক্ষাগ্রহণ করছেন।

আমাদের স্বপ্ন

মানুষে মানুষে বন্ধন নিশ্চিতে সংস্কৃতি-বিনিময়ের চেয়ে উত্তম কোনো উপায় নেই বলে আমি বিশ্বাস করি। রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বাধা পেরিয়ে ভিন্ন জাতি ও সমাজকে এক সূত্রে আবদ্ধ করে শিল্প, যার উৎস নান্দনিক চেতনা এবং সৃজনশীলতার তাড়না।
বাংলা গানের ঐতিহ্য যে অতি সমৃদ্ধ তা নির্দেশ করে এ-গানের নন্দিত শিল্পীদের তালিকা। এ সমৃদ্ধ সংগীত ও সংস্কৃতির ধারাকে সম্ভব সব রকম উপায়ে বিশ্বদরবারে তুলে ধরা আমাদের সবার কর্তব্য। এই লক্ষ্যেই স্থাপিত হয়েছে বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়।
আমার স্বপ্ন যে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নবীন প্রজন্মের শিল্পীরা বিশ্বখ্যাত উচ্চাঙ্গসংগীতশিল্পীদের সঙ্গে একই মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করবে। তারা বিশ্বদরবারে গর্বের সাথে বাংলাদেশের নাম তুলে ধরবে।
– আবুল খায়ের, চেয়ারম্যান, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন

গুরুকুলের অধ্যক্ষ

বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে আসা-যাওয়ার মাঝে আমি অনুভব করেছি, এদেশের মানুষ অসম্ভব সংগীতপ্রিয়। আমাদের সংগীতালয়ে শিক্ষার্থীরা অনেক ভালোবাসা ও আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে শিক্ষাগ্রহণ করে থাকে। আমার বিশ্বাস, কয়েক বছরের মধ্যেই তারা এক-একজন সুযোগ্য শিল্পী হয়ে উঠবে। তাদের প্রতি আমার আশীর্বাদ রইল।

-পণ্ডিত উলহাস কশলকার

গুরুকুল

পন্ডিত উলহাস কশলকার (খেয়াল)
প্রধান গুরু

পন্ডিত সুরেশ তালওয়ালকার (তবলা)

পন্ডিত কুশল দাস (সেতার)

পন্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার (সরোদ)

পন্ডিত উদয় ভাওয়ালকর (ধ্রুপদ)

সঞ্জীবনী কশলকার
শিক্ষকমণ্ডলী সহযোগী

কৌশিক মুখার্জী
সরোদ শিক্ষক

কল্যানজীত দাস
সেতার শিক্ষক

উপদেষ্টা পরিষদ
ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খান, বিশিষ্ট সরোদশিল্পী

শামীমা পারভীন, সাবেক অধ্যক্ষ, সরকারি সংগীত মহাবিদ্যালয়

ডঃ রেজোয়ান আলী, শিক্ষক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

ডঃ অসিত রায়, শিক্ষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

প্রিয়াঙ্কা গোপ, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ইউসুফ খান, বিশিষ্ট সরোদশিল্পী

ফিরোজ খান, বিশিষ্ট সেতারশিল্পী

আশীর্বাদ

আমি সবসময়ই শুনে এসেছি যে, বাংলাদেশের মানুষ বাঁশি শুনতে খুব ভালোবাসে। এমনকি বাঁশি শুনতে না পেলে তাদের দিনটিই অপূর্ণ থেকে যায়। এই  জেনে আমি পরিতৃপ্তি লাভ করেছি।
-পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া

বাংলাদেশ আমাদের যেসব কিংবদন্তি শিল্পী উপহার দিয়েছে তাঁদের মধ্যে অন্যতম বাবা আলাউদ্দিন, বাহাদুর হোসেন খাঁ, আলী আকবর খাঁ এবং বিলায়েত খাঁ। তাঁদের অবদান শিল্প ও সংগীতে মহত্তম অর্জনের পথ প্রশস্ত করেছে। শাস্ত্রীয়সংগীতের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পুনরায় সুযোগ সৃষ্টি করেছে ‘বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়’।
-পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী

আমি মনে করি, গুরু-শিষ্য পরম্পরা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত লাভজনক হবে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন শাস্ত্রীয়সংগীত সংরক্ষণ ও জনপ্রিয় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
-ওস্তাদ আমজাদ আলী খাঁ

Enter your keyword