আলী যাকের: ফারহিন খান জয়িতা। আমাদের দেশের এক তরুণ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী। মাতামহ প্রয়াত ওয়াহিদুল হক সঙ্গীতাচার্য, রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ। মা স্বনামধন্য শিল্পী মিতা হক। কেবল এই পরিচয়ই যথেষ্ট হতো জয়িতার সংগীতের আসরে একটি বিশেষ স্থান করে নেওয়ায়। কিন্তু তারও চেয়ে যে বড়, এ সকল পরিচয় ছাপিয়ে, জয়িতা তার নিজ গুণেই তা অর্জন করে নিয়েছে। বাংলাদেশের রবীন্দ্রসংগীতচর্চার ভুবনে সে তার নিজের আসনটি স্থায়ী করে নিয়েছে নিজ কৃতিত্বে। আমি এর আগে জয়িতার গান অনেকবার শুনেছি। কিন্তু এই বিশেষ ঘন বাদনে যে গানগুলো ধারণ করা হয়েছে সেগুলো শুনতে-শুনতে নিজের অজান্তেই আমি এক ভিন্ন সুরের জগতে চলে যাই। রবীন্দ্রনাথের গানের যে বৈচিত্র্য সে বিষয়টি আমাদের অনেক সাধারণ শিল্পীর কাছে সচরাচর ধরা পড়ে না। জয়িতা তার মুন্সিয়ানা দিয়ে সেই বৈচিত্র্য এই সিডিটিতে নিজেই প্রতিষ্ঠিত করে দিল। রবীন্দ্রনাথ বিভিন্ন রীতিতে তার গানের সুর রচনা করেছেন। আমরা প্রায়ই বলে থাকি রবীন্দ্রনাথের গান ধ্রুপদাঙ্গের গান। ঠিক সেই ধ্রুপদ যেমন আছে, তেমনি রবীন্দ্রনাথের গান খেয়ালনির্ভর, সেটিও আছে। রবীন্দ্রনাথের গান টপ্পায় রয়েছে। কি নেই? এই বৈচিত্র্যটিকে তুলে ধরা হয়েছে এই বিশেষ ঘন বাদনের মাধ্যমে। এই গানগুলো শুনলে ঠিক যেমন রবীন্দ্রনাথের গানের বৈচিত্র্য সম্বন্ধে একজন মানুষ বুঝতে পারে, তাঁর সুর লালিত্যে অবগাহন করতে পারে, তেমনি যে কেউ এটাও উপলব্ধি করতে পারে যে, জয়িতা অনেক দূর যাবে। ভবিষ্যতে বাংলা সংগীতে জয়িতার একটি বিশেষ স্থান করে নেওয়ার সম্ভাবনাটিই এই ঘন বাদনে অনিবার্যভাবে প্রতিষ্ঠিত হলো।
