মনোনীত গবেষক পরিচিতি
২০২৩ সালের ‘গণেশ হালুই বেঙ্গল গবেষণা বৃত্তি’র জন্য নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে উন্মুক্ত আহ্বানের মাধ্যমে আবেদনপত্র জমা পড়ে। বাংলাদেশের দৃশ্যকলা-চর্চা সন্নিহিত চল্লিশ থেকে আশির দশকের সময়কালের যে কোনো প্রাসঙ্গিক গবেষণা-প্রয়াস, যা বারো মাসে সম্পাদন করা সম্ভব, তা যাচাই-বাছাই করে তিন সদস্যের বিচারকমণ্ডলী ‘গণেশ হালুই বেঙ্গল গবেষণা বৃত্তি ২০২৩’-এর জন্য একজন গবেষককে মনোনীত করেছেন। এ উপলক্ষে আগামী মঙ্গলবার ২৫ জুলাই সন্ধ্যা ৬টায় বেঙ্গল শিল্পালয়ে ‘মনোনীত গবেষক পরিচিতি : গণেশ হালুই বেঙ্গল গবেষণা বৃত্তি ২০২৩ ‘ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজনে প্রধান অতিথি থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুন নবী।
পশ্চিমবঙ্গের বরেণ্য শিল্পী ও গবেষক গণেশ হালুইয়ের আনুকূল্যে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ‘গণেশ হালুই বেঙ্গল গবেষণা বৃত্তি’ প্রদান করা হয়ে থাকে। আমরা আশা করি, ‘গণেশ হালুই বেঙ্গল গবেষণা বৃত্তি’ প্রদানের মধ্য দিয়ে নবীন দৃষ্টিভঙ্গিতে সঞ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশের দৃশ্যকলা-চর্চার অনুষঙ্গী নানা বিষয়ে গবেষণা, জিজ্ঞাসা ও অন্বেষার পথ প্রশস্ত হবে।
মনোনীত গবেষক পরিচিতি অনুষ্ঠানে সবাইকে সাদর আমন্ত্রণ।
– বেঙ্গল ফাউন্ডেশন
শিল্পী গণেশ হালুইয়ের জন্ম ১৯৩৬ সালে, অবিভক্ত বাংলার জামালপুর জেলায়। ব্রহ্মপুত্র পার্শ্ববর্তী জামালপুর শিল্পীর শৈশবকে ঘিরে রেখেছিল অসম্ভব এক মায়ায় ও রহস্যে। সেসব প্রকাশ পেয়েছে তাঁর জলরঙে এবং কালি-কলমে। কেবল প্রকৃতির অবয়ব নয়, তার অন্তর্গত ছন্দও কবিতা হয়ে জেগে উঠেছে গণেশ হালুইয়ের ছবিতে।
দেশভাগের পর চৌদ্দ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় চলে যান তিনি। তারপর দীর্ঘ সংগ্রাম। একটা সময় দিন কেটেছে রিফিউজি ক্যাম্পে। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তিনি আজ ভারতের অগ্রগণ্য চিত্রশিল্পী। কিন্তু ভুলতে পারেননি জন্মভূমির টান।
১৯৫৬ সালে কলকাতা গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ থেকে পাশ করে গণেশ হালুই পরের বছর আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ায় চাকরি নিয়ে চলে যান অজন্তা। সেখানে অজন্তার ছবির প্রতিলিপি তৈরির কাজে যুক্ত ছিলেন। অজন্তার ছবির নান্দনিকতা ও তার প্রেক্ষাপটের বৌদ্ধ দর্শন তাঁর নিজের ছবির বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সে-সময় ‘টেকনিকস অফ অজন্তা ম্যুরালস’ শীর্ষক একটি মূল্যবান গবেষণাপত্র তিনি প্রকাশ করেন। নিসর্গ রচনায় গণেশ হালুইয়ের খ্যাতি দেশ-বিদেশে পরিব্যাপ্ত।
‘আমার কথা’ স্মৃতিগ্রন্থে গণেশ হালুই লিখেছেন তাঁর ছোটোবেলার কথা, বড়বেলারও। দেশভাগের যন্ত্রণা, আর্ট কলেজ, অজন্তা হয়ে আবার আর্ট কলেজের সঙ্গেই যোগসূত্রের পরিক্রমা। জন্মভূমির জন্য কিছু একটা করার প্রবল তাগিদে তাঁর কল্যাণে প্রবর্তিত হয়েছে ‘গণেশ হালুই বেঙ্গল গবেষণা বৃত্তি’।